দুর্ঘটনায় আহত, ক্যান্সার বা অন্য কোন জটিল রোগে আক্রান্তদের জন্য, অস্ত্রোপচার কিংবা সন্তান প্রসব অথবা থ্যালাসেমিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়। অনেকে রক্তদান করতে চান না কারণ রক্তদান সম্পর্কে অনেকেরই নানা নেগেটিভ চিন্তাভাবনা থাকে। যেমনঃ রক্তদান করলে চিকন/রোগা হয়ে যাবে, অসুস্থ হয়ে পড়বে, শরীরে রক্ত সংকট দেখা দিবে ইত্যাদি। কিন্তু রক্তদানের কোন শারীরিক ক্ষতি হয় না বরং রক্তদান কররে আপনার অনেক উপকার হবে। আসুন আমরা রক্তদানের উপকারিতা গুলো জেনে নিই।
রক্তদানের উপকারিতা সমূহঃ
১. প্রতিবার রক্তদানের পর রক্তদাতার অস্থিমজ্জা (Bone marrow) নতুন রক্ত কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়। ফলে রক্তদানের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যে সে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।
২. শরীরের রক্ত কণিকা গুলোর মধ্যে লোহিত রক্ত কণিকার আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ১২০ দিন। তাই আপনি যদি রক্তদান নাও করেন আপনার এই লোহিত রক্ত কণিকার ১২০ দিন পর নষ্ট হয়ে শরীরের অন্যান উপাদানের সাথে মিশ্রিত হয়ে যাবে।
৩. চার(৪) মাস পর পর রক্তদানে শরীরের কোন ক্ষতি নেই।
৪. রক্তদাতার রক্তে HIV(এইচ-আই-বি), Hepatitis-B(হেপাটাইটিস-বি), Hepatitis-C(হেপাটাইটিস-সি), Syphilis(সিফিলিস) এবং Malarial Parasite(ম্যালেরিয়াল পরজীবী) এর উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়। রক্তদাতা রক্তদানের ফলে এই সকল টেস্টগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করার সুযোগ পাবেন
৫. রক্তদানের ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের (Cholesterol) এর পরিমাণ কমে, ফলে আপনার হৃদরোগের সম্ভাবনা ৩৩ ভাগ কমে যাবে।
৬. রক্তদানে শরীরের Free radicals এর পরিমাণ কমে যায়। তাই বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেরিতে আসে।
৭. স্বেচ্ছায় রক্তদানে মানসিক প্রশান্তি আসে। কারণ প্রতি ২ সেকেন্ডে বিশ্বে এক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। আপনার দান করা এক(১) ব্যাগ রক্ত একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে।
৮. সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত রক্তদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
৯. রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্যের বা সওয়াবের একটি কাজ।
১০. মানুষ হিসেবে মানুষের উচিৎ অন্যের সেবায় এগিয়ে আসা। আপনার দেওয়া একব্যাগ রক্ত যদি একটি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে তবে অবশ্যই সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতিরে রক্তদানে এগিয়ে আসা উচিৎ।
তাই আসুন আমরা সবাই রক্তদানে অভ্যস্ত হই। এবং নতুন যুবকদের রক্তদানে আগ্রহী করে তুলি। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ