সুস্থ থাকার জন্য সকালে একটি পুষ্টিকর নাস্তার কোন বিকল্প নেই। সকালে পুষ্টিকর নাস্তা আমরা প্রায়ই মিস করি অফিসের তাড়াহুড়াতে।
হয়ত দেরিতে ঘুম থেকে উঠে কেউ কেউ একবারে দুপুরের খাবার খান। কিন্তু এটা করা যাবে না।
গবেষনায় বলছে যারা পুষ্টিকর নাস্তা করে তারা দিন শেষে কম ক্লান্তিতে ভুগে।
নাস্তায় আঁশযুক্ত অট্মিল বা লাল আটার রুটি রাখতে পারেন, সাথে রাখতে পারেন সবজি এবং ডিম।
পুষ্টিকর নাস্তা খেলে অনেকক্ষণ আপনার ক্ষুধা লাগবে না। আর ক্ষুধা থেকেই কিন্তু ক্লান্তির সুত্রপাত হয়।
কিছু গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনার ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করে। তাই, প্রতিদিন এগুলো করতে পারেন।
ক্লান্তি অনুভব করার আরেকটি অন্যতম কারণ হল ডি-হাইড্রেশন।গবেষনায় দেখা গিয়েছে ডিহাইড্রেশন কিংবা পানিশুন্যতায় আপনার ক্লান্তি বেড়ে যায়।
আপনি কখন বুঝবেন আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন? আপনার যদি গলা শুকিয়ে আসে, আপনার প্রসাব যদি হলুদ হয় তখন বুঝবেন আপনি পানিশুন্যতায় ভুগছেন।
হাইড্রেটেড থাকতে আপনি প্রতি ঘণ্টা বা কাজের ফাঁকে ডেস্ক থেকে উঠে গিয়ে হালকা হেটে একটু পানি খেয়ে নিতে পারেন।
হাঁটার ফলে কাজের একঘেয়েমি দূর হল আবার আপনার পানির চাহিদাও পূরণ হল।
হালকা ক্ষুধায় এক মুঠো বাদাম খেতে পারেন, যা উচ্চ ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেট (ফলিক এসিড) সমৃদ্ধ।
এর পুষ্টিউপাদান শক্তি এবং নতুন কোষ উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। আর পুষ্টির অভাব আপনাকে ক্লান্ত করে দিতে পারে।
বাদাম আপনাকে তড়িৎ গতিতে শক্তি সঞ্চার করতে সহায়তা করে।
দারচিনি এবং পুদিনা পাতা মিষ্টি সুগন্ধি কিছু মানুষের জন্য ক্লান্তি দূরিকারক হিসেবে কাজ করে।
এককাপ রং চা দারচিনি ও পুদিনা পাতা দিয়ে আপনার ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে।
তবে, এই সুগন্ধি আসলে একজন ব্যক্তির শক্তির স্তরকে প্রভাবিত করে কিনা এবং কিভাবে এই সুগন্ধি প্রকৃতপক্ষে কোন ব্যক্তির শক্তির স্তরকে প্রভাবিত করে কিনা তা দেখার জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
শরীরচর্চা একটি প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার, কারণ যখনই আপনি ব্যায়াম করেন, অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত আপনার হৃৎপিণ্ড,পেশী এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।
অল্প করে হলেও শরীরচর্চা ক্রুন নিয়মিত। প্রতিদিন ১০ মিনিট দিয়ে শুরু ক্রুন তারপর ধীরে ধীরে সময় বাড়ানোর চেষ্টা ক্রুন।
এমনকি, আপনি যখন ফোনে কথা বলছেন তখন হাটতে হাটতে কথা বলতে পারেন।
মোটকথা হল, শরীরের মুভমেন্ট বজায় রাখুন।এটি আপনার এনার্জি লেভেল বাড়াতে সহায়তা করবে।
গবেষনায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন বাইরে কয়েক মিনিট রোদে থাকুন এতে আপনার মেজাজ ভালো থাকবে,স্মৃতি শক্তি বাড়াবে এবং তথ্য ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
বাইরে যেতে না পারলে অন্তত জানালা খুলে দিন বা বারান্দায় বসুন গায়ে রোদ লাগান।তবে, অতিরিক্ত রোদ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
আপনার মস্তিষ্কের সর্বোত্তম কাজ করার জন্য জ্বালানী প্রয়োজন। যখন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাবে, আপনার কাজ করার ক্ষমতা কমে যাবে এবং আপনি ক্লান্তি অনুভব করবেন।
তাই যদি আপনার মস্তিষ্ক কাজ করার ক্ষমতা কমে যায় , তখন এমন একটি স্নাক্স খান যা আপনাকে বিকেলের বাকি সময় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি দেবে।
স্ন্যাকস হতে পারে প্রোটিন ও হালকা কার্ব সমৃদ্ধ খাবার খান — যেমন পিনাট বাটার সঙ্গে কলা টুকরা, অথবা ফলমূল ইত্যাদি যা দীর্ঘমেয়াদে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখার জন্য ভাল।
আপনি চাইলে চা কফিও খেতে পারেন এতে একঘেয়েমি দূর হবে পাশাপাশি হালকা এনার্জিও পাবেন। তবে, অবশ্যই সীমিত পরিমাণে।
আবেগ আশ্চর্যজনকভাবে সংক্রামক। যারা ক্রমাগত নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করেন এবং ক্লান্ত থাকেন তারা আপনার মানসিক শক্তি নষ্ট করতে পারে।
অন্যদিকে, যারা সবসময় আনন্দে থাকে এবং একটিভ থাকে তারা আপনাকে একটি সত্যিকারের লিফট দিতে পারে।
এনার্জি না থাকলে কাজে মনযোগী হওয়া যেমন কঠিন তেমনি কাজের সঠিক ফলাফল পাওয়াও দুষ্কর।তাই, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।