- হওয়ার কারণসমূহ এবং চিকিৎসা
আপনার কি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে? আপনি কি ধূমপান করেন? শরীরের ওজন কি দিন দিন বেড়েই চলেছে? তাহলে এখনি সতর্ক হউন।
আসুন আমরা স্ট্রোক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেই।
কোন কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালী সংকচিত হয়ে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষ নিস্তেজ হয়ে যায়। এই অবস্থায় স্ট্রোক দেখা দেয়।
স্ট্রোক হওয়ার কারণ সমূহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে আমরা খবু সহজেই এই মারাত্মক সমস্যাটিকে প্রতিরোধ করতে পারি।
তাই আসুন স্ট্রোকের সঠিক কারণ গুলো জেনে নেই।
- স্বাভাবিকের তুলনায় যাদের ওজন বেশি তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাছাড়াও রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকার কারণেও দেখা দেয় এই সমস্যাটি।
- উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হতাশা, দুঃশ্চিন্তা ইত্যাদি কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।
- যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন তাদের এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
- শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ব্যায়াম। তাই শারীরিক পরিশ্রম এরেবারেই করেন না এমন ব্যক্তিদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের পরিমাণ বেশি থাকলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- যারা প্রতিদিন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ধূমপান করেন তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাছাড়াও অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকিকে অনেকাংশেই বাড়িয়ে দেয়।
- যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম ও সঠিক ডায়েট প্লান অনুসরন করেন না তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
- কারো হার্টের অসুখ থাকলেও তার স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসাঃ এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। প্রথমেই সিটি স্ক্যানারে রোগীর মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য এটি করা হয়। মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত গলানোর জন্য রোগীর শিরাতে ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এতে করে রোগী প্যারালাইসিস বা দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা থেকে রক্ষা পান। মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত গলানোর জন্যেও জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে।
- উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে।
- ধূমপান, মদ্যপান, তামাক পাতা ও জর্দ্দা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- হৃদপিন্ডে কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করে তা ঠিক করতে হবে। রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার কম পরিমাণে খেতে হবে। ফাস্টফুড, বাদাম, সন্দেশ, রসগোল্লা, দুধ, বিরিয়ানি, পাঙাশ,চিংড়ি, কাঁকড়া, গরু বা খাসির মাংস, নারিকেল বা নারিকেলযুক্ত খাবার ইত্যাদি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। শারীরের বাড়তি ওজন কমাতে হবে।
দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। আপনার একটু সচেতনতাই পারে আপনাকে স্ট্রোকের মত মারাত্মক সমস্যা থেকে রক্ষা করতে।