মা-বাবার থাকলে বাচ্চাদেরও মাইগ্রেন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে এই আশংকা আরও বেড়ে যায়
প্রধানত হাইপারএক্সাইটেব্ল নার্ভের কারণেই মাইগ্রেন বেশি দেখা যায়। আসলে নার্ভ ও ব্লাড ভ্যাসকুলার সিস্টেমের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশনই মাইগ্রেনের মূল কারণ। মা-বাবার মাইগ্রেন থাকলেও বাচ্চাদের মাইগ্রেনের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বয়সের ওপর নির্ভর করে বাচ্চাদের মাইগ্রেনের আশঙ্কা বাড়তে থাকে। তিন থেকে সাত বছরের বাচ্চাদের মাইগ্রেন হওয়ার আশঙ্কা ৩%। সাত থেকে ১১ বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হিসেবটা বেড়ে হয় ৭ থেকে ১১%। বয়ঃসন্ধির সময় এই আশংকা আরও বেড়ে যায়। পিউবার্টির আগে ছেলেদের এবং পরে মেয়েদের মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
পূর্বলক্ষণ
অনেকসময় মাইগ্রেনের সঙ্গে চোখ ঝাপসা হয়ে যায়— কারণ ভিস্যুয়াল, সেন্সরি, মোটর অ্যাক্টিভিটিতে রদবদল দেখা যায়। সবসময় এটা হয় না। মাইগ্রেনের আরেক ধরন হল চাইল্ডহুড পিরিওডিক সিনড্রোম। এই ধরনের মাইগ্রেনে পেটে ব্যথা, বমি, ভার্টিগোও হতে পারে। এগুলোকেই সাধারণত মাইগ্রেনের পূর্বলক্ষণ বলে বিবেচনা করা হয়।
শিশুদের কেন হয়?
তাই বাচ্চাদের মাইগ্রেন নির্ণয় করার আগে কেন, কখন, কোন পরিস্থিতিতে মাইগ্রেন হচ্ছে বোঝা দরকার। বিশেষ করে মাইগ্রেনের ট্রিগার বা উদ্দীপক কার ক্ষেত্রে কী, সেটা চিহ্নিত করা দরকার। একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম উদ্দীপক হতে পারে— যেমন ঘুম ঠিকমতো না হওয়া, ঠিক সময়ে না খাওয়া, পড়াশোনার চাপ। চিজ বা চকোলেটের মতো কিছু খাবার থেকেও মাইগ্রেন দেখা দিতে পারে। মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সাধারণত অনেকক্ষণ ধরে হয়। কপালের একদিকে ব্যথা হয়, ঘনঘন ব্যথার প্রকোপ হয়।
প্রতিকার
অ্যাকিউট ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। তবে সপ্তাহে দু’তিনবারের বেশি ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। বাকি ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। যদি সপ্তাহে একবারের বেশি মাইগ্রেন হয়, কিংবা ব্যথার চোটে বাচ্চা স্কুলে না যেতে পারে, তখন জোর দেওয়া উচিত প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার ওপর।
এই চিকিৎসার লক্ষ্য হল, দু’এক মাসের মধ্যে যেন ঘনঘন মাইগ্রেন অ্যাটাক না হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি কিছু নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট যেমন, ভিটামিন রাইবোফ্লাভিন বা ম্যাগনেশিয়ামও দিতে হতে পারে। ঘনঘন মাথাব্যথার প্রকোপ কমাতে এগুলো কাজে দেয়।
ওষুধের পাশাপাশি বায়োবিহেভিয়ারিয়াল থেরাপিও মাইগ্রেনের চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। বায়োবিহেভিয়ারিয়াল থেরাপির মধ্যে পড়ে রিল্যাক্সেশন এক্সারসাইজ, মেডিটেশন ইত্যাদি। প্রিভেনটিভ ট্রিটমেন্ট শুরু করার আট থেকে ১২ সপ্তাহ পর ওযুধের ফল পাওয়া যাবে। দীর্ঘ চিকিৎসায় সমস্যা কমতে থাকে।